ব্যাক্তিগত শোক
অভিমানী পুরোনো দৃষ্টিকোনে, কেন এই অচেনা শ্রাবণ,
বিচ্ছেদ এত কঠিন হয় ?
বিয়োগের ভারে, ভারাক্রান্ত শুধু তো হৃদয় নয়।
অস্ফুট অশ্রু আর নীরব হিম সারি সঞ্চয়।
সিক্ত অন্তর - শেষবেলার উজ্জ্বল দৃষ্টিকারণ।
না, অার নয় বিশ্রী যত দুঃখ-প্রলাপ।
তারপর,
বুঝি পৌঁছে গেছো বলাকাসেনায়।
সে ঢেউ অগণিত, ঠিক তোমারই মতো। অনন্ত সমুদ্দুর।
আমার যত ইচ্ছেচিঠি, এক আকাশ পথ বাকি তার।
শিখেছি তো, লড়াই যেন থাকে জারি।
সমাপ্তি তো অনিবার্য হয়।
পরাজয় তো শূন্যতা, সে তো ছন্দ নয়।
তবু...
বিচ্ছেদ এত কঠিন হয় ?
প্রকাশ্যে থাক বিষন্নতা। বিষাদ বারি।
অাশ্বাসে হোক অমরত্ব লাভ।
দুঃখ-দিনের নীরবতা রইল ভিতর-ঘরে। যত্ন করে।
শুধু হৃদয়জুড়ে তোমার প্রতিধ্বনি বাঁচিয়ে রেখো।
বিদায়ীগান তো যোদ্ধার নয়। তারকা মাঝে রশ্মি তব উড়ান পাক। নক্ষত্রশীর্ষে ভাস্কর রও।
বিচ্ছেদ এতই কঠিন হয়?
কিছু শোক বড্ড ব্যাক্তিগত হয়!
~চিত্রা✒️
-
আমরা যেমন হারিয়েছিলাম সুবর্ণরেখায়।
অভঙ্গ আমি তখনও।
বিচ্যুত হয়নি কথাদের প্রবলতায়।
জাপটে ধরেছি শুধু দুর্বল, সমস্ত-সত্তাটাকে। চারপাশে ঘনঘন বজ্রপাত। হাওয়ার দল আমাদের সম্পূর্ণ অস্তিত্ব জুড়ে।
প্রশ্ন আসতো 'ভয়?'। সংযত মনে, সেসব বহুদূরে।
দীর্ঘ দ্বীপের অমত্ততায় বসে থেকেছি, বিপরীত চোখে সমস্ত মন রেখে। বিরক্ত শব্দের আবিষ্কার, এই পৃথিবীর অজানা তখন।
ধাঁধার মতো তোমায় খুঁজতাম। বুঝতে পারতাম না।
সত্যি কী হয়।
কী যেন ডাকতে-
বৃষ্টিপ্রিয়া। হৃদয়সীনা।
সেসব দিনের বয়স এখন। অনভিপ্রেত। অজানা।
নির্জনতায় একা আমি।
হারিয়েছি খড়কুটো। অনিবার্যই ভ্রমণপ্রেমী!
~চিত্রা✒
-
স্মৃতিভেজা ঘুমহীন ভোর
সরে যাবে ঠিক।
মেঘ এসে, ছুয়ে দেবে রাত, বৃষ্টিমুখর।
শুধু আজ ছন্নছাড়া বিকেল গুলো, সুর বেঁধে ফেলুক।
প্রান্তে ক্রমশ হারিয়ে ফেলব মিথ্যে সময়।
উদাসীন মন,ক্লান্ত ভীড় আর পুরোনো অভিনয়।
সমুদ্র তোমার মধ্যেই দেখব, সত্যি তোমায়!
কান পেতে শুনব অজস্র অভিমান।
রাখব কথা, বাজবে নতুন আলোর গান।
শুধু আজ আরেকবার দূর মরশুমে পৌছানো যাক।।
সেই বেরঙিন আগের মতন। কুড়িয়ে আনব পুরোনো রসায়ন।
নীলচে শিরায় সাহস কোথায়!?
মন্দবাসার গল্প বলা বারণ!
হোকনা রঙ ফিকে,
অবশেষে ফিরব পুরোনো শহরে
আবার রাখব চোখ পুরোনো মানুষের চোখে।।
~চিত্রা✍
-
দলচ্যুত জায়গা ।
ক্লান্তির ছায়া পথভ্রষ্ট।
আধুনিকতাও ফলাও করা আধিপত্য বিস্তার করেনি।
তবুও শিক্ষিত সমাজের থেকে জীবনধারার আলোর উজ্জ্বলতা তীব্রতর।
সে সমাজেও ধর্ম আছে। জাত নেই। নিয়মরক্ষার সহানুভূতি আসেনি।
আনন্দের সমাগম জমা হয় প্রতিটি ছোটো-ছোটো প্রাকৃতিক সংযোজনে।
উপহারের বাহুল্য ও নেই।
সেখানে মনখারাপের আঁচে ব্রাত্য হয়নি
ছেলেমেয়ের দল। নেই কাঁটাতার।
ধর্মের আড়ালে হিংসা নেই।
তফাৎ পৌঁছায়নি পাঁচালি-নামাজে।
নেই ইঁদুরদৌড়ের দাপাদাপি।
ফুল-পাতায় আনন্দের সামিয়ানা লাগা।
আর হয়ত নেই সেই জায়গার অস্তিত্ব!!
-
যারা অসমযুদ্ধে পারদর্শী - ত্যাগকে দুর্বলতা ধরে জয়ের রং গায়ে মাখে,
জমানো প্রশংসার দলে ভিড়ে - আসলে তারা ব্যর্থতার রাস্তায় পা এগিয়ে রাখে!-
...অন্ধকারের দুয়ার ভেঙেছে সিত দীপ্তি
ধুসর শৈথিল্যে খুঁজেছি বিশ্রামরঙ...
বৈচিত্রহীন শহরে তাই আমি নিরুদ্দিষ্ট, ছদ্মবেশী...-
শহরের ধোঁয়াপথে - এখন শুধু স্বভাব-সুলভ বর্ণান্ধতা।
সময়ের দৌড়ে ঝাপসা হত - আজও হয়
জনৈক সব অভিজ্ঞতা!-
ভিতরঘরে সুড়ঙ্গ গড়ি। অন্ধকারে সরু পথ। একা।
ভয় পাই না। পুরোনো আলো-আঁধারি অতীত ফুটিয়ে ফেলি।
দু'হাতে দিগন্ত ছুঁই। ঠান্ডা স্বপ্ন আর প্রেমরাশি।
তখনও অন্ধ আমি। ধূলোর মধ্যেই কেমন যেন উৎসাহীভাব। উন্মাদ।
বন্ধ।
নতুন অতীত। অল্প চিড় উঠেছে। সদ্যজাত।
তখনও স্রোত ছাড়িনি নির্দ্ধিধায়। ঠিক কিছু সাদা-সুতো মাঝে এক এলোকেশী।
অবশেষ।
কীভাবে সব ঝাপসা, চোখজুড়ে এক পৃথিবী অন্ধকার। সবকিছুতে কেমন যেন মনখারাপী বাতিক পুষি।
পুরনো ছন্দ মিলিয়ে দেখি- বুঝতে পারি, চটক। মিথ্যে জেল্লায় মস্ত ভুল!
ভাবিয়ে তুলি, প্রশ্ন করি-হিসেব করে পর্দাটানা! মূকাভিনয়? জোগাড় করা প্রেমগীতিকায়?!
খান তিনেক আঘাত মাথাপিছু!! অষ্টপ্রহর আর এক্সট্রা কিছু?
না। দোষ নিজেরই। পুরাতন বয়স আর মধ্যবিত্ত অভ্যেস! আবার ঝাপসা সব।
গুলিয়ে ফেলি-
ক্ষতর দাগ লাল না কালো!
অপেক্ষা রাখি। হবে সুরের বদল। শুধু একফালি সুযোগ দিও।
হবে উল্টোপুরাণ। মিলিয়ে নিও!!-
সব ক্ষত অক্ষয় হোক।
থামুক এই অভিজ্ঞতার উড়ান,
নিঃসঙ্গ হোক বিষাক্ত খেদ।
ইতি হোক সব চর্চা। অনধিকার।-