তোমার জন্য অনুভূতির যে শীতল স্রোত আমার বুকে বয়ে চলে আমি তা যত্নে রেখে দিই;
নীরবতায় আমার অভিমান তীব্র হয়ে উঠে অথচ,তুমি চোখে তাকিয়ে কি যেনো খুঁজছো,
চোখের কাছে সবটা ধরা পড়ে যায় তাই নাহ?
আমি মুখ সরিয়ে নিই,তুমি দূরে চলে যাও।
অনেক কিছু বলার থেকেও কিছুই বলা হয়নি তোমায়,
বারংবার ফিরে যেতে বলো নিশব্দে আমায়।
তোমার দুঃখ বেড়ে উঠে মধ্যরাতে;
আমি ছেড়ে চলে আসি নীরবতাতে।-
https://www.instagram read more
।।আমাদের আর দেখা হয়নি।।
প্রায় একযুগ আগে আমাদের দেখা,
মাঝে কেটে গেছে কতবার বর্ষ।
ছনের যে ঘরগুলো ছিলো,
সেগুলো দালান–কোঠায় দাড়িয়েছে;
বাড়ির পাশের পুকুরটা ভরাট হয়েছে বালিতে,
জল শুকিয়ে বর্ষার অভাবে;
প্রায় একযুগ এই গ্রাম বর্ষা দেখেনি,
আমার চলে আসার পরে;
ওই কামরাঙা গাছটা আজ আর নেই,
শৈশবও মুছে গেছে।
তোমার আমার অস্তিত্বের বিলুপ্তি ঘটেছে,
এপার–ওপার হতে;
এরপর আমাদের আর দেখা হয়নি!
-
ঘর অন্ধকার করে বসে আছি,
আলোর তীব্রতা খুব চোখে লাগে।
ঘরের মধ্যে অসাড় হয়ে পড়ে থাকি তাই।
একটা ছায়া সুগভীর ভাবে কাছে ডাকে,
জড়িয়ে থাকতে চায়!
মায়ার মতো আটকে রাখে ওই দুটো চোখ।
মায়া ভীষণ মায়া!
দুঃখবিলাসী মেয়েটা ভালোবাসে...
স্যাঁতস্যাতে এই জীবনটাকে,
সুগভীর ছায়াটাকে,
জড়িয়ে থাকা মায়াটাকে।
অপেক্ষার প্রহরে গ্রহণ লাগে,
ছায়া এসে ছুঁয়ে দিলে বর্ষা নামে।
বর্ষা তোমার ভীষণ প্রিয়?আমি বৃষ্টি হতে চাই।
-
।।নগরীর বুকে একদিন।।
___________________________
তুমি বলেছিলে যে সন্ধ্যায় চাঁদের গায়ে জ্যোৎস্না লেগে যাবে,
এই নগরীর মাঝপথে তোমার আনাগোনা বাড়বে।
খরস্রোতা নদীর বুকে উঠা জোয়ারের
তীব্রতায় কান পাতলে শোনা যাবে,
হৃদপিণ্ডের বাঁ পাশের শব্দ।
তুমি বলেছিলে,সেই রাতে খুব যত্নে চোখে কাজল পড়ো!
দক্ষিণের জানালার পাশে খোলা চুলে দাঁড়িও, বিন্দু বিন্দু অপেক্ষা জমিয়ে ভালোবাসি বোলো সুদূরের ওই আকাশকে।
-
।।সফরনামা।।
ভিড়ের স্টেশনে একলা দাঁড়িয়ে,সকাল হতে দেখি;
সফরনামা বদলে গেলে সমস্তটাই মেকি।
সূক্ষ্ম সেলাইয়ে দুঃখ ঢাকি,অতীত থেকে বর্তমান;
পরিচিত মুখ ভুলে যাওয়াতে থাকে না কোনো অভিমান?
আমার বাড়ির উঠোন জুড়ে,কাগজের নৌকা ভাসে,
ইকির মিকির গল্পগুলোকে ওরা আজও ভালোবাসে।
বিকেলের বুকে গল্প জমে,সন্ধ্যে নামে একা,
সময়–সংলাপ হারিয়ে যায়,স্রোতে স্মৃতি রাখা।
মনখারাপের স্যাঁতস্যাতে ভাব,ফিরে যাবে যাযাবর;
খাদের শেষ গভীরতা মেপে,কেউ আগলে রাখে ঘর।
-
অক্ষয় হোক সব মঙ্গল,হিংসে বিবাদ ভুলে;
একই চাঁদ উঠেছে আকাশে,হিন্দু–মুসলিমের ঘরে।
খুশির ঈদ তৃতীয়া জুড়ে লাড্ডু–সেমাইয়ের মাতলে,
লাল রক্তের মানুষ সকলে,জাতপাত সব পরে।
এক আকাশ সবার মাথায়,এক মাটিতেই থাকি;
পরস্পরকে আমরা ভাই বলে ডাকি।
-
।।তোমাকে মনে পড়লে।।
তোমায় মনে পড়লে এখন, আকাশ হয়ে যাই,
সোদা মাটির কাছে গিয়ে স্নিগ্ধতা খুঁজে পাই।
তোমায় মনে পড়লে এখন, বৃষ্টি হতে চাই,
দোতারা বাজিয়ে মাঘের সন্ধ্যেতে বাউল গান গাই।
অবেলার স্মৃতি,মন–খারাপী অসুখ দুঃখ গিলে খায়,
খাদের বুক ছিড়ে দুটো সাঁকো বয়ে যায়।
ভাঁড়ের চা, বাঘাযতীনের আড্ডা পুরোনো ওলের সোয়েটার;
কোনো এক শীতে কাবু হলে মনে পড়া দরকার?
তোমায় মনে পড়লে এখন পাহাড়ের পথে হাঁটি;
জলের স্নিগ্ধতায় দুঃখ ভাসে,জীবনের ছায়াছবি।
তোমায় মনে পড়লে এখন বারান্দায় পথ আগলাই;
আষাঢ়–শ্রাবণের আসার আগে নিজেকে সামলাই।
-