জড়িয়ে বুকে রাখবো তোমায়
ভাববে তুমি উপকথা-
আপনি সবেমাত্র মেডিকেল কলেজ থেকে বাড়ি ফিরেছেন, স্টেথোস্কোপ পাশে রেখে শরীর-টা এলিয়ে দিলেন সোফায়। এইবার তো আবার বাড়িতে পেসেন্ট দেখতে হবে। কলিং বেলটা বেজে উঠলো, দেখুন তো একবার উঠে, কেউ এলো কিনা! আরে কেউ না, পাড়ার পাজি বাচ্চা গুলো।
আপনার ফোনটা বাজছে, রিসিভ করুন। unknown নাম্বার?
কথা বলুন।
:- হ্যালো,
:- হ্যাঁ ডাক্তার বাবু, এইতো আপনার সামনেই বসে আছি। আমায় দেখতে পাচ্ছেন না বুঝি! আপনি যে নেশা ছাড়ানোর অ্যাড দিয়েছেন ওটা দেখেই এলাম। আপনার অ্যাসিস্ট্যান্ট আজ দুপুরে আমাদের শ্মশানের দেওয়াল এ পোস্টার লাগিয়ে গেছে।
নিন ট্রিটমেন্ট শুরু করুন।-
আমি জানি তুমি থেকে যাবে; তুমি অতো সহজে যাচ্ছো না।
আর যাবেই বা কি করে বলো! তুমি তো আর প্রিয় বন্ধু, স্কুলের প্রেম, এদের মতো না, যে খুব সহজেই ছেড়ে যাবে।
মানুষ খুব সহজেই অভ্যাস তৈরি করে। এই যেমন ধরো রোজ বিকালে জল দেওয়া ফুলের গাছে, কিংবা রোজ সকালে ফুল তোলা।
মানুষ দুঃখ পোষে নিজের অভ্যাসে, আর নিজের সাথেই আপস করে বেড়ায়।-
আমি দেখেছি বাগানের পাশে সদ্য গজিয়ে উঠেছে বনফুল,
তার উগ্র গন্ধ কাপালিকের মন্ত্রচারনের মতোই তীব্র।
সভ্যতার অলক্ষে অদৃষ্টে বুঝি পেতে চায় চরণ-
আঁকড়ে ধরতে চায় শিকড়ে কোনো ইতিহাস।
মানুষ আজও ভগবানকে বড্ড ভয় পায়;
যদি পরকালের সুখ বেহাত হয়ে পড়ে!
স্নান সেরে ওঠে ভিক্ষুকের বউ,
আর ভগবান পাত পেড়ে বসে থাকে।
আমি তুলে এনে রাখি ফুলদানিতে।
কানে আসে চেনা কিছু মন্ত্র, এইবার সময় হয়েছে ঈশ্বরের সুখ বিতরণের;
সুখী-দুখী পাশাপাশি বসে উপঢৌকন এর লোভে!
মনে পড়ে প্রদীপের গলা ফাটা চিৎকার, ধূপেদের গোঙানির স্বর,
দুঃখ জন্মদাগের মতো; আমার আর ভয় নেই...
আমি আর আগাছা যত ফুল ওই ঈশ্বরের থেকে বঞ্চিত।।-
ঢাকের আওয়াজ বাতাস মাখে; শরত বুঝি দ্বারে!
পুজোর আমেজে মাতবে ভুবন থাকবে না আর আঁধারে...-
ঈশ্বরওতো করছে ভুল আর করছি আমি মাফ,
সেলফোনেতে বন্ধু অনেক কাঁধেই হাতের অভাব।-
বাইরে তখন প্রবল ঝড় কাঁপছে বাড়ি-ঘর,
কৃষ্ণচূড়ার ডালটা ভেঙে বাবুই যাযাবর-
আমি এখন আর কাঁদিনা,
বায়না করিনা ওটাই চাই,
বাবার পায়ের হাওয়াইচটি-
এখন আমার পায়ে হয়।-