বিবাগী মন
---------------
কলমে : ভীষ্মদেব রানা
অবচেতন মন খুঁজে অনুক্ষণ নির্লিপ্ত প্রেমের ছোঁয়া,
বাস্তব যেথায় সংকট অবস্থা, দিশেহারা বন্ধনের মায়া।
ঠুনকো মনের নেইকো ভরসা, পরিস্থিতির সাথে বদলায়,
ক্ষনিকের কষ্টে মানিককে পরিত্যাগ, অলীকের পশ্চাদে ধায়।
সময় কখনো দেখায় ভয়, কখনো যোগায় মনে অদম্য সাহস,
মনুষ্য আমরা অবশ্য ভুলে যাই, যে এটা মায়া মরীচিকার বশ।-
বর্তমান নিবাস প... read more
শিকড়
----------
অন্তর্ভেদী, রসায়ন আস্বাদি, ছড়িয়ে দেয় চতুর্দিকে বিস্তার,
নিস্তার নাই, অকুতোভয়, ডরায় সবারে লেলিহান জিহ্বা তার।
সরল, নরম, পরজীবী, পরভোজী, আত্মস্বার্থ লোভী সর্বভুক,
সদা সাবধান, কেড়ে নিতে প্রাণ, হিসেব করে ফেল পা, না হয় যেন ভুলচুক।
সমাজের বুকে আছে মহা সুখে, মুখে পড়ে আছে সব মুখোশ,
নিজে অপকর্ম করে, অন্যায়ের পথ ধরে, আর অন্যের ঘাড়ে দেয় দোষ।-
আশা
---------
দৃপ্ত আলো টিকরে পড়ে
ভাঙ্গা টিনের কত ফাঁক গলে।
কালবৈশাখী ঝড় ভেঙে দিয়েছে ঘর
বিছানা ভিজেছে জলে।।
রাতজাগা মন বিষণ্ন এখন, রবির আলো
এসে যোগায় উদ্যমের অক্সিজেন।
প্রকৃতির মারে কে কি করতে পারে
তার কাছে চলে না কোনো লেনদেন।।
নতুন উদ্যমে আবার গড়া, ভাঙ্গবে
জেনেও সবাই দিই আসক্তি পাহারা।
যতদিন শ্বাস ততদিনই তো চলে আশ
হৃদ স্পন্দন স্তব্ধ হবে যখন তখনই জগৎ ছাড়া।।
-
সুখের মোড়কে কাঁটার দহন মনের চিলেকোঠায় অগ্নুৎপাত।
বজ্র আঁটুনি ফস্কা গেরোয় নানান ঝামেলায় মস্তিষ্কে কষাঘাত।।
শুষ্ক আকাশ কখনো বৃষ্টি ঝরায়, বিনা মেঘেও কখনো বা বজ্রপাত।
নীরবে নিভৃতে কখন যে অতর্কিতে চিত্তে আশঙ্কার অবাধ যাতায়াত।।
সময় কখন যে কেড়ে নেয় তৃপ্তি, দাঁড়িয়ে অতৃপ্তির পসরা সাজিয়ে সম্মুখে।
কালবৈশাখী ঝড় মনের ভিতর স্মৃতির ফসিলে যায় কিছু ছাপ রেখে।।
অনিত্য এই বাসনার সংসারে কলহান্তরিকা আসন পেতে আছে বসে।
দাবাগ্নি একসময় হয় ছাই মনে দুঃখ পাই, বৃথা কষ্ট রোষের দোষে।।-
সত্যের জয়
---------------
কলমে : ভীষ্মদেব রাণা
মিথ্যেরা সব আসছে ধেয়ে,
যেন সত্যের টুঁটি ধরবে চেপে।
সত্য কিন্তু পায় না একটুও ভয়,
দেবে সুদে আসলে সবটুকু মেপে।।
মহাকালের কপোলতলে যত মিথ্যা
সব যাবেই যাবে রসাতলে।
শির উঁচিয়ে সদা সুন্দরকে বাঁচিয়ে,
সত্য প্রস্ফুটিত হয় কলিকালে।।
হয়তো সাময়িক সহে নির্যাতন,
দেখে মিথ্যার অন্যায় আস্ফালন।
একদিন তার তো হবেই পতন, হবে
সত্যের আলোয় আলোকিত ভুবন।।
-
অতলান্ত জীবন সমুদ্রে খুঁজছি নুড়ি পাথর নেড়ে চেড়ে,
কখনো ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি, নাই প্রয়োজন মনি মানিক্যে।
কাজের কাজ হচ্ছে না কিছু গোলকধাঁধায় মায়ার পিছু,
কোন সাকিনে সেরা অমূল্যরতন আছে, তার দিশা দেখাবে কে?
যেটুকু পথ একা পেরিয়ে এলে চৈতন্য স্বরূপের দেখা মেলে,
কে দেখাবে সেই অচেনা ঠিকানা, ধরবো যারে অবচেতনে।
মিথ্যা জগৎ মিথ্যা বসত বাটি এ দুনিয়ায় দেখি কর্মই খাঁটি,
কেন ঐশ্বর্য লাগি লাঠালাঠি, সবই তো মাটি, রবে পড়ে এই ভুবনে।।
মনের ঘরে দিয়ে তালাচাবি মায়াকে ছেড়ে কোথায় পালাবি,
যখন ত্রিতাপ জ্বালায় খাবি খাবি, ধরলে ইষ্টরে অবশ্যই উতরে যাবি।
শুধু সৎ কর্ম সৎ চিন্তার দ্বারা কাটবে সকল বিপদ সকল ফাঁড়া,
হাতে ধরে নিয়ে যাবেই যাবে, উদ্ধার করতে সশরীরে আসবে নবী।।
কলমে : ভীষ্মদেব রাণা
-
বাস্তবতা
------------
কলমে : ভীষ্মদেব রাণা
সময়ের কঠিন চপেটাঘাতে যখন যন্ত্রনা বাড়ে দিনে রাতে,
মৌন থেকে দুশ্চিন্তা সরিয়ে রেখে ইষ্টকে ধরে থাকাই তখন শ্রেয়।
নয় এ তো অতি সহজ কর্ম পরিধান করা ধৈর্য্যের বর্ম,
দিগ্বিদিক জ্ঞান যায় হারিয়ে, ভীষণ অবসাদেও চলে যায় কেহ।।
নিজের ইচ্ছেই ঘটে না কিছু ভবিতব্য ঠিক আসে পিছু পিছু,
মিছে মায়ায় বদ্ধ জীব আমরা যে, তাঁর লীলা বোঝা বড় দায়।
সৎ কর্মের ধ্বজা শক্ত হাতে ধরে সুখ দুঃখকে সমান উপভোগ করে,
জীবন সমুদ্রে কাটতে হবেই সাঁতার তাছাড়া অন্য কোন উপায় নাই।।-
চির ভাস্বর তুমি, চির নতুন তুমি, ওগো আমার প্রাণের বিশ্বকবি।
এসো নব নব রূপে, এসো গো তুমি প্রাণে, নবরূপে তোমায় অনুভবি।।
তুমি ছাড়া ওগো বাংলা ও বাঙালি তথা সারা বিশ্ব যে আজ অপূর্ণ।
রবির আলোয় আলোকিত বাংলা সাহিত্য, বাঙালি হিসেবে মোরা ভীষণ ধন্য।
পথের দিশা দেখিয়েছো তুমি, চেতনা জাগিয়েছো লেখায় ও গানে।
সবার হৃদয়ে নিয়েছে স্থায়ী জায়গা করে, আগুন জ্বালিয়েছো প্রাণে।।
প্রেমের কবি তুমি, সারা বিশ্বে বিলিয়ে দিয়েছো প্রেমের বারিষ ধারা।
সহস্র বর্ষ পরেও তোমার লেখনী পড়বে লোকে, হবে পাগলপারা।।
সাধক ছিলে তুমি , সাধনার ফসল অকাতরে বিলিয়ে দিলে জগতে।
অধ্যাত্ম জগতেও অবাধ বিচরণ, তব নিবেদিত প্রাণ পরম পদে।।
১৬২ তম জন্মদিবসে জানাই শ্রদ্ধা, প্রনাম, ভক্তি তোমার ওই রাতুল চরণে।
সর্বদাই আছো তুমি হৃদয়ে, সখা, প্রভু, পিতারুপে আছো সকলের প্রাণে।।
-
আধুনিকতার কুঠারাঘাতে যুগানুযায়ী প্রাণপাতে,
যৌথ পরিবার নিউক্লিয়ার আজ, ডিজিটালের দ্বারা চিড়েচেপ্টা।
যাচ্ছি ভুলে সব যোগাযোগ সোশ্যাল মিডিয়া করছি উপভোগ,
আনছি ডেকে কত দুরারোগ্য রোগ, জানি না কি হবে শেষটা।।
হচ্ছে ক্ষীণ আত্মার টান চতুর্দিকে টঙ্কার কলতান,
কর্তব্য কর্ম থেকে হচ্ছি বিচ্যুত, জীবন জীবিকাতেই সবাই ব্যস্ত।
সময়ের এখন বড়ই অভাব যুগ বদলে দিচ্ছে স্বভাব,
আত্মীয় পরিজনের মনোভাব দেখে এখন হচ্ছি যে ভীষণ ত্রস্ত।।
কলমে : ভীষ্মদেব রাণা
-
সুখের খোঁজে
----------------
এমন সফল মানুষ আছে কি কেউ
যারে হয়নি পেরোতে নানান কণ্টক পথ?
আছে কি কেউ বিনা উদ্যোগে যার
হয়েছে পূরণ তার নিজের মনোরথ?
ওরে চলতে গেলে দলতে হয় রে
আসুক না যতই বিঘ্ন বিপদ বাধা।
হারাতে নাই কখনই নিজ মনোবল,
তবেই হবে সাফল্যের মালিকা গাঁথা।।
কোথায় শান্তি হাতের মুঠোয় মেলে
কোথায় সুখের ঝুলি দোলে রে?
উদ্যম প্রচেষ্টা আর কর্তব্যের প্রতি অনুরাগ
ছাড়া সাফল্যে দুয়ার কি খোলে রে?
এখানেই স্বর্গ আর এখানেই নরক
একথা কি কেউ আর বোঝে রে?
বিনা ক্লেশে অবশেষে শুধুই দুঃখ মেলে,
তখন চাতকের ন্যায় সুখবৃষ্টি খোঁজে রে।
কলমে : ভীষ্মদেব রাণা-