যেখানে মুখচোরা শালিকের ভীড়ে ,
কে যেন দাঁড়িয়েছে উন্নত শিরে !
খোয়াবি কিসমিস ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে
গোলাপি দল খায় আস্ত চিবিয়ে ।
যেখানে লজ্জার চক গেছে গুম ,
আর তারপরে নীরব নিঝুম
আদরে ডুবে গিয়ে ক্লান্ত মরাপাখি
আবার ডাকছে উড়ছে যে দেখি ,
এবারে তাই এবারে তাই হারিয়ে যাই
তোর গহীন বনে !
ফেরার পথ খুঁজে না পাই ,
কেঁপে উঠি তোর আলোড়নে ।
-
গোধূলি নামলো যখন প্রাণ চায় চা ;
হালকা মুচমুচে যদি মেলে টা ,
তবে পুরো যায় জমে সন্ধ্যেটা ।
গোটাদিন তাপে ঘামে
ক্লান্তি যে বদনে ,
চা পেলে তেজ আসে
অন্তর সদনে ;
তাই আমি বাবুর মতো পায়ে তুলে পা
গোধূলি নামলো যখন পান করি চা ।
-
আদো প্রেম খড়কুটো হয়ে
তোমার চোখে বানায় বাসা ,
জ্বলে যায় আদর জোনাই
ওষ্ঠে জমে অভিলাষা ।
কী রাগ সাধছে পিহু ওই বনেতে ?
মদির নয়ন কেন যে সহসা ?
আদো প্রেম খড়কুটো হয়ে
তোমার চোখে বানায় বাসা ।
শ্যাওলা ঘিরছে দেওয়াল ,
কতকাল রোদ পড়েনি !
অভিসারি আগুন জ্বেলে
আবদার কেউ করেনি ...
এ যাবৎ একলা দেখি ফুলের ফোটা ,
শুনে যাই অল্প করে রঙের ভাষা ;
তবে আজ এই ফাগুনে
দাও না ঢেলে ভালোবাসা !
সুর পাক ধুলোর সেতার ,
চোরাস্রোতে যেমন ভাসা ।
কী রাগ সাধছে পিহু ওই বনেতে ?
মদির নয়ন কেন যে সহসা ?
আদো প্রেম খড়কুটো হয়ে
তোমার চোখে বানায় বাসা ।-
আমি শহরে তোমার এসেছি
আবার গোলাপ দুহাতে নিয়ে ,
আবদারে ফের কাঁটায় আঙুল লেগে ,
অবোধ রক্ত গড়িয়ে পড়েছে
বেয়ারা প্রেম উঠেছে জেগে ।
আমি তোমার বাগানে আরও একবার
গোলাপ বসাবো বলে ,
অর্ধমুদিত চোখের কোলে
নেমেছে আবার একঘেঁয়ে সেই স্বপন ;
নতুন সূর্যে গিয়েছি ডুবে ,
আবার আদর লেগেছে পূবে
অনাদরে যে মাটি শুকিয়ে গিয়েছে
তায় আদরের বীজ বপন ...
না না এমন আক্কেল হয়নি আমার ,
ভাববো নিজেকে খেলনা তোমার ;
তোমার খেলা অজানা সে এক রকম ,
আমার গোলাপে শিশির জমে না ,
মনের পাঁচিলে পায়রারা শুধু করে বকম বকম ।
আমি আবার এসেছি উত্তর খুঁজে
তোমার রঙের দক্ষিণে ,
অপলক চোখে বোকা ফাল্গুন ,
বেবুনিয়াদি প্রেম মরশুম ;
অবোধের মত কাটা হাতে গোলাপ নিয়ে...
বলো তুমি কি নেবে গো চিনে ?
-
হাতঘড়ি , দামী সেন্ট , বেল্ট , গগলস ;
তারপর আসে মানিব্যাগ ।
হাতে হাত , চুপচাপ চোখে চোখ ,
আবেগের সাতসমুদ্র পার কিন্তু তীরে ফিরে
কুড়ানো সেই মানিব্যাগ ।
তোয়াক্কা না করা বেপরোয়া যুবক
নিজের সখের রাস্তায় বুক চিতিয়ে হাঁটে ,
কিন্তু পথে পড়ে থাকে সেই মানিব্যাগ,
হোঁচট খেয়ে যায় ,
পোড়া কপালে বাস্তবতার স্ট্যাম্প পড়ে যায় ।
সৎ উদ্যম , সাহস চাপা দিয়ে দেয় মানিব্যাগ ।
কোনোটা চামড়ার , কোনোটা নয় ;
তাদের গায়ে লেগে থাকে রোজনামচা ,
প্রত্যেকটা খাপ ভরে থাকে সিঁড়ি ওঠার কৌশলে ।
কখনও সেটা হাতবদল করে দেয় দুর্ভাগ্য ,
কখনও এসে জমা হয় রাশি রাশি সৌভাগ্য ;
সবের অন্ত্যমিল শেষমেশ মনে করিয়ে দেয়
জীবন , যৌবন , পারিপার্শ্বিক ,
বন্ধুবান্ধব , আত্মীয় , পরিচিত
সবার মাঝখানে জেগে আছে মানিব্যাগ ।
-
ছমছমিয়া
ছমছমিয়া স্টেশনে যখন ট্রেন থামলো তখন প্রচন্ড ক্ষিদে পেয়ে গেছে । প্ল্যাটফর্মে কোনো লোক না দেখতে পাওয়ায় মনটা যখন ছটফট করছিলো তখন হঠাৎ কোথা থেকে একটা একটা লোক এসে " আ, পুরী বোলে, সব্জি বোলে "। একটা চেয়ে প্যাকেট খুলে দেখে পকেট থেকে টাকা বের করে যখন টাকা দিতে গেলাম লোকটা নেই আর দূর দূর পর্যন্ত কাউকেও দেখলাম না ।
-
নেত্রপল্লব চির মুদিত হইবে যবে ,
স্বজনেরে বলো চিনিব কীভাবে ?
তারা রইবে ঘিরি মোরে ,
রইব হেন ঘন ঘোরে ,
সর্ব অনুভব ঘুচাইয়া নিঝুম নীরবে ।-
এবারে ঘুমের খবর ঘড়ির কাঁটায় ছোঁবার আগে ,
ছাপবো নিয়ম মতো আমার যেমন সময় দাগে ;
আর নেই পথের খবর , এই কটাদিন সরাসরি ,
নেই আর তুফানমতো উত্তেজনায় গড়াগড়ি ।
বুকের বাঁয়ে সাজিয়ে দিলাম মহল-কেলার ছবি ,
মোগলের গল্পে ভিজে হলাম সখের ন্যায়ে কবি ।
চোখের তারায় কেষ্টনামের জল নিয়ে ভাই ,
থাকবো আশায় বেঁধে বুকের যেমন তল পাই ।
এবারে সিলেবাসের মধ্যে আবার পড়বে ব্যঞ্জন ,
টোকা থাক ফুটনোটে সব মনের যত রঞ্জন ।
মাথার চুলে যেটুকু যা আটকে আছে রাস্তা ধুলো ,
খামখেয়ালের বাক্সে পুরে রাখছি আমি সেসবগুলো ।
ফের হব বার নিরুদ্দেশে অতর্কিতের মাঝখানে ,
পি.এন.আরের অঙ্কখাতা কষবো যেমন মন টানে ।-
ভালোবাসি, তার কি কারণ হয় ?
তবে কেন বারণ হয়
স্রোতেতে ভাসা ?
হিমেল হাওয়ায় যখনই কাঁপবো ,
অসহায় থাকবো ,
তুমি-ই ভরসা ।
ও... কঠিন যতই হোক না গল্প তোমার ,
ছুঁয়ে দিয়ে তাকেই আমি কাব্য করি যে আমার ...
ওগো প্রিয় , ওগো প্রিয় ,
মনের দানে ভরিয়ে নিও ।-