নীল, হলুদ, সবুজ, গোলাপী।
চেনা রঙ, cough syrup-এর রঙ।
রঙগুলো চেনায় নাকে, বুক জেঁকে বসা virus।
রঙগুলো কদিনের মধ্যেই বিনাশ করে virus কে।
আর মনে জেঁকে বসা virus?
তারা কোনো রঙ চেনায় না, কোনো রামধনু syrup তাদের বিনাশ করে না।
রক্তের কালো স্রোতে একা হৃদয় নিয়ে তাই তারা ঝোরে পড়ে কবিতায়।-
সেই তোমাকে হারালাম।
না পাওয়াটাই স্বাভাবিক ছিল।
সব জেনে বুঝেও কেন তবে আজ বুকের ভেতর এমন তছরূপ?
স্বপ্নে ভরা টিনের বাক্সতে মরচে ধরেছে, চাবিটা সামনেই ঝোলে, আজ আর তা খুলতে ইচ্ছে করেনা।
অনুভূতি জমা মেঘগুলোকে ভাসিয়েছিলাম তোমারই আকাশে, আজ বৃষ্টি পরলেও সে জল তোমায় স্পর্শ করেনা।
এই তো জীবন।
এই ভাঙা গড়া খেলা।
গঙ্গার ঘাটে একা বসে হাওয়া খাওয়া হয়নি অনেকদিন।-
সেই ছোট্টবেলায় একদিন ছেলেটা রোদ্দুর হতে চেয়েছিল —
শীত দুপুরের আজানকে নিয়ে সবুজ পাতায় খেলতে চেয়েছিল।
সমাজ তাকে রোদ্দুর হতে দিলোনা,
টেনেটুনে বানালো এক আস্ত মানুষ।
মানুষ হয়ে ছেলেটা কারোর মনটুকু পেতে চেয়েছিল —
আঁচল রঙের প্রেমে ডুবে সুখের শান্তি পেতে চেয়েছিল।
সেই মানুষটি তাকে মন দিতে চাইলোনা,
বারবার প্রত্যাখ্যান করে বানালো এক আস্ত পাগল।
দু'দিনের এ জীবনে সেই পাগল ছাড়তে চলেছিল —
যাওয়ার আগে এক মনের মাঝে তার নামটা রাখতে চেয়েছিল।
সেই ব্যস্ত মনে অনেক নামেরই আনাগোনা হলো,
আর ভীড়ের মাঝে মেঘের মতোই তার নামটাও হারিয়ে গেলো।-
যে ভালোবাসা হারিয়ে ফেলে ছেড়ে চলে গেছে,
সেও থাকুক ভালো —
রাতের তারা গায়ে মেখে নিজের মন করুক আলো।
যে মনের খুব প্রিয় হয়েও, এলোনা আমার কাছে,
সেও থাকুক খুশি —
মেঠো রোদের সুতো হয়ে তার গালদুটি ছুঁয়ে আসি।
যে চিনে নিতে চায়নি বলে জানা হয়নি তাকে,
সেও ফেরাক আঁখি —
চাওয়া পাওয়ার কষ্ট ভুলে মনের পদ্মে তাকে রাখি।
আর এই যে আমি, মন খারাপের আমি, এভাবেই থাকি বেঁচে —
কিছু ভাবনা ও মনখারাপ হোক চিরজীবনের সাথী, যখন ডেকেছি তাদের যেচে।-
শহরে আবার শীত নেমে এসেছে,
নতুন জ্যাকেট মন কমলালেবুর ঝুড়িকে মিঠে রোদের মতো স্পর্শ করে ছুটে যায় স্মৃতির ভিড়ে...
শহরে আবার শীত নেমে এসেছে,
ফুটপাতের আগুন ক্ষণিকের স্বস্তি দেয়, কুয়াশাচ্ছন্ন হ্যালোজেনের সারি আবার প্রসারিত করে ছটফটে যন্ত্রণাগুলো...
শহরে আবার শীত নেমে এসেছে,
সব অসুখের কি সমাধান মেলে?
বোবা হয়ে বসে থাকি এই ভালোলাগা অ্যান্টিজেনের যথাযথ অ্যান্টিবডির অপেক্ষায়...
শহরে আবার শীত নেমে এসেছে,
এ জন্মে কিছু কিছু কথা বলা হয়ে উঠবে কি আর?
যে বলতে পারলোনা, পরের জন্মে শীতের কোলকাতার দুপুর হয়ে আঁকড়ে ধরো তাকে।-
পূর্ণিমার আলো বাঁধ ভাঙে,
তবু এ শহর হ্যালোজেন মাখতে চায়।
রাস্তা খেতে খেতে গন্তব্যহীন হয়েছি,
ভাবি এ মহানগরীর কী মানে?
ভীড় আসে, ভীড় বাড়ে, ভীড় যায় —
সময়কে compass এ ঘুরিয়ে ব্যস্ত করেছে সবাই,
কেউ চিনে নিতে চায় না —
কারই বা হাত ধরে বলি এ ভীড়ে আমাকে খুঁজে নিও...
পূর্ণিমায় মহানগরী হ্যালোজেন চাইবে না যেদিন,
সেদিন থামিয়ে দেব প্রিয়জনের উত্তরের প্রত্যাশা।-
তার ঠোঁটের কোণে লেগে থাকা মৃদু হাসির সৌন্দর্য তুলনা করা যায় একমাত্র মায়ের পায়ে নিবেদিত ১০৮ পদ্মের সাথে,
তার চোখের মণির রূপ যেন তিলোত্তমার রাস্তায় নেমে আসা আলোয় আলোকিত মহাষ্টমীর সন্ধ্যা,
তার নতুন জামার বাহার আর লম্বা চুলের সুগন্ধে বাড়ে বাড়ে মহাপুজোর ঢাকের আওয়াজ বিচ্ছুরিত হয়,
আর আমি আমার মধ্যবিত্ত ভালোলাগা নিয়ে দূর থেকে মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে তাকে দেখি, শুধু দেখি, তার দু'চোখ জুড়ে নিজের সর্বনাশ...-
Laptop টা চালু করে আর ফোনটা বসিয়ে চার্জে,
Smart TV টা on করে তার সোফায় বসাই সাজে।
মাসের শেষে বেতন গুনে 'আতঙ্ক' channel চালিয়ে –
ভাবল সে, "যাঃ, এবার পুজোর selfie যাবে পালিয়ে!"
হবেনা যে কোনো house party, বসবেনা গানের আসর,
উত্তাল হয়ে নাচা হবেনা, বাজবেনা ঢাক কাসর।
স্বার্থসিদ্ধি বন্ধ এবার Facebook তাই খুলে
"বুঝেছ উপেন, এ 'পুজো' লইব কিনে" – এ কথা সে বলে!
হোক না একবার পুজো বন্ধ, এ যে শুধুই উল্লাস,
থালা বাসন বাজিয়েও সে ডাক্তারের জন্য হতাশ।
কাঁদে ঢাকি, কাঁদে বেলুনওয়ালা, কাঁদে রাস্তার শিশু,
এই কটা দিনই রোজগার হয়, সারা বছর খায়নি কিস্যু।
শিল্পীর কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আজ ফুচকাওয়ালাও কাঁদে –
আগের বছর গিললি কতো, এবার ঠেললি বিপদে?
এই পাঁচদিনের উপার্জনে নেই 'work from home' সুযোগ,
পুজো বন্ধ রব বাঙালির 'স্বার্থ' তালিকায় দিল যোগ!-
গোলাপ ছাড়া বাকি ফুলগুলো বুঝলোই না প্রেম নিবেদনের অর্থ।
ওদের বুঝতে দেওয়া হলোনা।
আজ কাঁটাতারের বেড়া জড়িয়ে ধরে ওরা কাঁদে।
তোমাকে তাই ফুলবাগানে রেখে ছুটি দিয়েছি।
সব সখ ভুলে আমি পড়ে থাকি আগাছার জঙ্গলে।
তবুও মনের ট্র্যাকের ওপর দিয়ে অপ্রত্যাশিত কাঁটাতারের ট্রেন ছুটে চলে...-
কিছু কিছু ভালো লাগা বা ইচ্ছে শহরের রাস্তায় মহোৎসবের আলো হয়ে ঝোরে পড়েনা, তারা থেকে যায় বারান্দার কোণে মাকড়সার জালে আটকে থাকা এক ফ্যাকাশে পালকের মতো, অপরিপূর্ণ, অক্লান্ত, আমাদের সমস্ত আবেগ গুলোকে জড়িয়ে ধরে।
-