তুষারপাত
শহর জুড়ে শীত নামে আর মনের ভিতর তুষারপাত,
দুঃখ ভোলার চাদর পেলে,কুয়াশা ঢাকার অজুহাত।
বুকের ভিতর চিন্তা বসে, ভীষণ খারাপ শরীর,
পরিযায়ীরা পাওনা নিয়ে, মাথায় জমায় ভীড়।
স্বপ্ন তবু গড়তে জানে, হঠাৎ ভাঙলে পরে,
পারদচাপের দোহাই শুধু, কাঁপতে থাকি জ্বরে।
মারণরোগে মাথার ভিতর, স্মৃতিভ্রংশের ঝুঁকি,
তোমায় হারাই, সবই হারাই, তবু বেঁচে থাকা বাকি।
-
অনুপ্রবেশকারী
শহরের সব আলো, শব্দবাজি ছেড়ে,
আজ সীমান্তে এসে দাঁড়িয়েছি, আমি।
সেখানে ঢুকতে গেলে, তোমার,
ভালোবাসার প্রমাণপত্র চায়, ওরা।
এদিকে আমি সর্বহারা এক প্রেমিক,
জন্মসনদ খুঁজতে গিয়ে, হারিয়ে ফেলি নাগরিকত্ব।
সেখানে একবার, শুধু একবার যদি তুমি,
তোমার ব্যাস্ততার সব সিঁড়ি ভেঙে,
উর্ধ্বশ্বাসে নেমে এসে জড়িয়ে ধরো আমায়,
তাহলে হয়তো বুঝতে পারবে ওরা,
কতটা ভালোবাসায় মানুষ এককাপড়ে,
এসে দাঁড়াতে পারে, বিদ্রোহের মুখে, একা ।।
-
পাহাড় আর তুই
আমার সাথে পাহাড়ে ঘুরতে যাবি?
যেখানে আমাদের কথা কখনো কেউ শুনতে পাবেনা,
তুই তোর সব দুঃখের কথা ভাসিয়ে দিবি হাওয়াতে, হয়তো একটা পাহাড়ি ছোট্ট ঝর্ণাতে,যেটা শুধু আমি শুনবো।
তোর সামনে কান্নায় ভেঙে পরবো, তোর কোলে মাথা রেখে হারিয়ে যাব না বলতে পারা কথার মাঝে, আবার আমায় ফিরিয়ে আনবি তুই কপালে হাত রেখে;
পাহাড়ে তোর ভয় জানি, তাই আমার হাতটা শক্ত করে ধরে থাকিস, আমি কখনো তোর হাত ছেড়ে যেতে দেবোনা, তোর পাশে থাকবো সব সময়; যেভাবে দুটো পাহাড় আজন্মকাল ধরে একসাথে থাকে, -আর জন্ম নেয় কত নতুন গল্প।
তেমনই আমাদের গল্পের নাম হবে ' পাহাড়ের থেকেও আমি যাকে বেশি ভালোবেসেছিলাম'
-কেমন?
-
বাস্তিল
যেদিন তোর দেওয়া শেষ গোলাপটা পাতার ভাঁজে,
আগের মতো ভালোবাসার গন্ধ হারিয়ে ফেলে।
সেদিনও রাত জেগে আমি গান বানিয়ে যাই,
আর পাথর বানিয়ে ছুঁড়ে মারি অভিমানের বাস্তিলে।।
-
আমরা যারা রোজ ঘর থেকে বেরোয় তোমার মত একটা সকালের দেখা পাবো বলে, তাদের কাছে তোমায় ছুঁয়ে যাওয়া হাওয়াও কত দুর্লভ তুমি জানো?
তুমি যখন তোমার অবাধ্য চুল একদিক থেকে সরিয়ে অন্যদিকে নিয়ে যাও, বা চোখ বন্ধ করে চুল বাঁধো মাথার পিছনে দুপুরের সূর্যের মতো, আমরা হাঁ করে তাকিয়ে থাকি সেই তীব্র রূপের দিকে, মুগ্ধতা আমাদের চোখ মুখ ভেদ করে চামড়ার তলায় গিয়ে জমা হয়, তুমি কিন্তু বুঝতেও পারোনা।
ভালোবাসার কথা বলতে আমাদের মতো নবিশ প্রেমিকরা চিরন্তনভাবে ব্যর্থ,ভীতুর মতো সেটা লুকিয়ে রাখে তোমার নাগাল এর অনেকটা বাইরে, আর তুমি তখন গোধূলির মতো এলোমেলো চুল নিয়ে, পোশাকের আড়ালে ভালোবাসা বস্তুটাকে নিয়ে হারিয়ে যাও দিগন্তরেখায়।
পড়ন্ত বিকেলের আলোতে আমরা নিজেদের একজায়গায় জড়ো করি,টেনে টেনে নিয়ে যাই বিছানাতে। ক্ষত-বিক্ষত নগ্ন শরীর গুলোকে তোমার মতো নতুন একটা সকালের লোভ দেখিয়ে সারাটা রাত না ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিই, একা একা...........-
অজুহাত
ফিরতে চাইলে তোমাকে আটকানো জানি কঠিন।।
ধরে রাখবার চেষ্টাতেই মুখ থুবড়েছি বার বার।।
পাহাড়ের ভালোবাসায়,নদী যেমন জন্মায় প্রতিদিন।
নতুন কোনো অজুহাত নিয়ে থেকে যেও প্রতিবার।
-
আর কিছুক্ষন নয় থাকতে পাশে
মেঘ ভেবে যাদের গায়ে স্বপ্নের আঁকিবুকি।
আষাঢ়ের বুকে সেই তোমার হারিয়ে যাবার ঝুঁকি।।
হাতটা ধরে যখন হাঁটতে শুরু করেছিলে,
ভালোবেসেছিলাম যতটা ভালোবাসা যায়।।
ছোট ছোট অনুভূতিগুলো প্রকাশ করার সাহস,
নিষিদ্ধ হাতছানিগুলো ছুট্টে গিয়ে ধরার আস্কারা,
বড় হতে পারতাম কি তোমাকে সঙ্গে না পেলে?
তালে তালে মিলিয়ে কি করে সবসময় অঙ্ক মেলাতে পারতে?
অবাক হয়ে ভাবতাম, সুরগুলো তোমার কাছে এত দীর্ঘস্থায়ী কেন?
চোখ খুললেই সবসময় পছন্দের পৃথিবী দেখা যায়না।
কিন্তু অভিযোগ শোনার লোকের অভাব,
তাই লোকগল্পে আর আমার মহাকাব্যে তোমাকে মনে রাখবো।।
-
।। ওড়ার মজায়, ডানা গজায়।।
তখন ছিলাম কিছুটা ক্যাবলা,
আর সব কিছুতেই বসতাম নাক গলিয়ে।
জ্ঞান ছিল মোটে দশ গামলা,
ভাব করতাম যেন রকেট মহাকাশে দেব চালিয়ে।
তখন পারতাম না শক্ত হিসাব কষতে,
ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে রাত জাগার স্বপ্ন দেখতাম।
ষোলআনা বোকামি ছিল উঠতে বসতে,
ভোটের দিন বাবার সাথে রাজনীতি শিখতাম।
বাংলা কোচিনে জয় গোস্বামী পাশে তোমার চোখ,
শ্রীজাতর কবিতা না বোঝা হুব্বা প্রেমিক আমি।
বাবার মোবাইল দিয়ে F.Bতে জিভ ভেঙ্গানো মুখ,
তোমাকে পাবোনা জেনে হঠাৎ শুরু হলো পাগলামি।
ওঝা এসেও ভালোবাসার ভূত তাড়াতে পারলোনা।
বিপদে পড়লাম আমি,ঘুমটাও হঠাৎ ভেঙে গেল।
কিন্তু শুধু তুমিই কখনো আমার আলাপ করলেনা।
অভিমান,অভিযোগে আমার মনটাও বড়হয়ে গেল।।
-
মিলনক্ষন
আলোর অন্তর্বাসে ঢাকা,
কাম-আঁধারের মন।
মিলন শেষেই ফুরিয়ে যায়না,
আপাত দামি ক্ষণ।।-
সাদা কালো
মনের কথা আটকে রাখা
ভালোবাসার খাঁজে।
সময় আজও তোমায় খোঁজে,
সাদা কালোর মাঝে।।-