তারে তুমি দেখিতে চেয়না
এ হৃদয়ে গভীর গহ্বরে যার বাস
যদি ছুঁতে চাও সে বিস্ময়
ছুঁয়ে দেখো আমার দীর্ঘশ্বাস ।-
চোখের পাতায় সোহাগ নদী
খড়স্রোতের আঁকিবুকি,
আমার সকল ধারা আজ
কেবলই 'তুমি' অভিমুখী !-
পৃথিবী রঙের মানুষ দেখেছি আমি
নীলাচল পর্বত দেখে , ডুবেছি উত্তল মহাসাগরে
দিগন্তের অসীমতা ছুঁয়ে দেখেছি আমি
দেখেছি সবুজের ছায়া তার দু হাত জুড়ে ।-
নীলের সীমা ছাড়িয়ে যাবে,
তুমি অনন্তের পথে চাও ,
চরণতলে আমকেই পাবে
শুধু ধীর কদমে এগিয়ে যাও ।-
আর একবার বর্ষা আসবে
গ্রীষ্মের দাবদাহে ঘুচিয়ে ,
শুকনো ডোবা টা ভরিয়ে
আর একবার বর্ষা আসবে,
চৈত্রের আগুন নিভিয়ে ;
হৃদয়ের জ্বলন্ত ফাটলগুলো বুজিয়ে
আরেকবার বর্ষা আসবে,
বর্ষা এলে
কাগজের আধ-ভেজা গুলো নৌকাগুলো
কতদূর যায় আঙ্গুল ধরে দেখে আসবো এবার ,
বর্ষা এলে বসন্ত কে ফিরিয়ে দেবো না-হয়,
না-হয় বর্ষা এলে পাঁচটা কবিতা বেশি লিখবো এবার
আর একবার বর্ষা আসবে,
কবিতার খাতা ভরিয়ে
আরও একবার বর্ষা আসবেই ।-
জানো , বিভীষিকার দেশে
আজও কেউ বৃষ্টির টুপটাপ গুণে
আজও যত্ন করে আতর ঢালে কলাটে
আজও টিপর অবাধ্য দাগ পড়ে
কারও কপালের ভাঁজে ।
জানো, দেশে ধর্মঘট , দাঙ্গা -
তরুলতার টানে তবু কেউ দুদণ্ড ব্যালকনিতে বসে
আজও সখের পর্দাখানা দখিনা হাওয়ার তালে ওড়ে ।
পথে পথে আগুন তবু -
আজও ময়দানের ঘাসে বাদমের খোলা পড়ে,
তেলেভাজার গন্ধে ভাসে চৌরাস্তার আড্ডা।
জানো, আজও চকলেটের সোনালী মোড়ক
বাসা বাঁধে ব্যাগের ভাঁজে ।
আজও শত চিৎকার ছাপিয়ে ওঠে
আনমনা গাওয়া রবীন্দ্রসঙ্গীত ।
জানো, আজও কেউ প্রেমে পড়ে চোখে চোখ রেখে ,
আজও মানুষ মানুষের কাঁধে হাত রাখে,
জানো, আজও মানুষ মানুষকে ভালোবাসে । ।-
তোমার সৈকত জোড়া বালুচরে
আমি রোদ মাখার বাহানায় রোজ বসি,
রোজ গুণি তোমার ঢেউ, একটা দুটো তিনটে-
একটার সাথে একটা মিশে যাচ্ছে অনায়াসে !
কি ভাবে আমি ডুবে যাচ্ছি তোমার অতল গভীরে!
তোমার কি ভয়ঙ্কর মনোরম সে ঢেউচ্ছাস !
আমি হাত উঠিয়ে একবারও
আর্তনাদ করছিনা ,বাঁচার তীব্র ইচ্ছে ও
যেন এ মৃত্যুর অপেক্ষায় ।
এই ডুবে যাওয়ার অপেক্ষায় যেন করেছি
এতকাল যাবৎ -
জগতের এত অনাহার অসহায়তা
কিছুই যেন আমায় ভাবাই না ,
ভবাইনা রাস্তার ধারে কঙ্কাল প্রায় শিশুর দল,
ভবাইনা ক্লান্তহয়ে ফেরা ফেরিওয়ালাটা,
ভাবাই না বর্তমান বাজারের আকাশ ছোঁয়া দর
নতুন বই ,সোঁদা মাটি, বারুদের গন্ধ
নতুন রঙের গন্ধ আমায় আর ভাসাইনা...
মেলা , কবিতার বই , ফুচকার দোকান
আমাকে ছুঁতে পারেনা ।
আমি ক্রমাগত ডুবতে থাকি তোমার নীলে
অনন্ত অসীম সে সুখের গভীরতা
যার কাছে পার্থিব সমস্ত সুখকর বিষয় তুচ্ছ..সামান্য।-
ভেজা ঘাসে হোক রোদেলা আলাপ
তোমার ডাকে
আমরণ শীত , জমাটে বরফ ঢাকুক
শহরটাকে
চাদরে আদর , উষ্ণতা থাক
তোমায় মুড়ে
ছোট ছোট সুখ, সংসার সাজুক
মিলনের সুরে ।-
দুই পাহাড়ি চোখে
পাথুরে রাস্তা ভেঙে নদী
বয়ে যাচ্ছে
এমন ধূধূ দুপুরে উপন্যাস
থেকে তুমি বেরিয়ে এসে
হাতে রুমাল ধরিয়ে বলবে
খুব হয়েছে, এবার মুছে ফেলো দেখি !
ওমনি নদীর জল আছড়ে
তোমার বুক পকেট ভিজিয়ে ফেলবে,
তোমার জামার সুতোয়,
আঙুলের স্পর্শে
আগন্তুক স্রোত মলিন হলে
তুমি আমার বিস্তার শুন্য ললাটে
চুমু খেয়ে বলবে
"খুব ভালোবাসি"।
-
আমার যত কবিতা আছে
চোখ বন্ধ করে পুড়িয়ে ফেলো না হয়,
সেই আঁচে
পুড়ে ছাই হয়ে যাক আমার সকল অস্তিত্ব ।
সেসব খুলে পড়তে বসে যেওনা যেন ,
তোমার একবিন্দু চোখের জলও
আমার সুবিশাল অগ্নিশিখাকে
এক নিমেষে নিস্তেজ করে দেওয়ার
ক্ষমতা ধারণ করে,
তোমার অস্থিরতা আমার মস্তিককে
নিষ্কর্ম করে ফেলে , বোধ বুদ্ধি লোভ পেয়ে যায়,
সত্যি বলছি ।
তার চেয়ে চোখ বুজে সব পুড়িয়ে ফেলো
ধোঁয়ায় ধোঁয়ায় উড়ে যাক
তোমার সকল প্রশ্ন ,সকল দ্বিধা ।
শুধু শেষ অবধি থেকে যাব আমি
এক আমি , যার সকল অস্তিত্ব কেবল তুমিতেই ।-