এমনই সব একলা রাতে পুরোনো, ফেলে আসা জীবন ফিরে আসে। টুকরো টুকরো সংলাপ, আর কোনোদিনও শুনতে পাবেনা এমন সব কন্ঠস্বর, এক-আধটা আবছা হয়ে আসা মুখ অন্ধকারে বুদবুদিয়ে ওঠে। আবার মিলিয়ে যায়। বাড়ির পিছনে বিস্তৃত জলাভূমি, জলাভূমি পেরোলে রেললাইন। শেষ ট্রেনটার বাঁশি কানে এসে বেঁধে এমন সব রাতে। যেন সুতীক্ষ্ন অনুযোগ জানিয়ে ছেড়ে চলে গেলো আরো একজন। আরামকেদারায় চোখ বুজে রায়ান মনে মনে হিসেব করার চেষ্টা করে পানপাত্র আর ঘুমের ওষুধের মধ্যে কোনটা তার নিকটতর। ইদানীং নিকটতম যদিও মৃত্যুই, তবু এইমুহূর্তে ভীষণ অবসন্ন লাগছে কোনো কিছুর জন্যই এই ঘোর ভেঙে উঠে দাঁড়াতে। দূরে মুসলমানদের পাড়া থেকে কোনো মৌলবির ওয়াজের আওয়াজ আসছে। কথা স্পষ্ট বোঝা যায়না তবে কয়েকবার 'আখেরাত' শব্দটা কানে আসে তার। সময় নিয়ে জড়িয়ে জড়িয়ে শব্দটা উচ্চারণ করে সে। "আখেরাত!" নির্মোহ নিয়তিবাদ। অনেক তাত্ত্বিক কচকচি মুহুর্তের মধ্যে কিলবিলিয়ে ওঠে মাথায়। রায়ান বিরক্ত হয়ে চোখ খোলে। এরপর সে ধীর পায়ে একটা ড্রিঙ্ক বানিয়ে ফিরবে। একসময় পরিপাটি বিছানায় গা এলিয়ে বেড সুইচটা অফ করে দেবে।
নাহ! আজও মরা হলোনা। কাল আরেকবার চেষ্টা করবে সে...
-