অপেক্ষার অবসান শেষ পর্যন্ত -
সকলকে জানিয়ে দেওয়া যে
আর দেরি নেই, মা আসছেন।
আজও মহালয়ার ভোর মানেই
রেডিওতে বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের মাতৃবন্দনা।
ধানক্ষেতে এক আমেঘ স্বপ্নের মত
কাশফুলের মাতোয়ারা হয়ে দোল খাওয়া।
সারা গাছতলা জুড়ে শিউলিফুলের রাশি,
গঙ্গা ঘাটে লোকারণ্য, চারিদিকে তর্পণের রেশ।
আকাশে, বাতাসে তোমারই আগমনীর সুর।
আজও মহালয়ার মানে বাঙালীর কাছে একই আছে,
শুধু পাল্টে গেছে সমকালীন পরিস্থিতি।
একের পর এক দুর্যোগ এসে তোলপাড় করেছে আমাদেরকে।
এ বছর শরৎ আসেনি তার যাবতীয় চিরকালীন নীলিমা নিয়ে।
এবছর সাইক্লোন এসে কেড়ে নিয়েছে লাখো মানুষের মাথার ছাদটুকুও;
মৃত্যুশোক ভুলতে না ভুলতেই আরও একটা ধাক্কা -
অতিমারি এসে আরো নিষ্ঠুর ভাবে প্রিয়জনদের কেড়ে নিয়েছে...একের পর এক....
তবুও আজ মহালয়ার ভোর মানেই,
সব দুঃখ,গ্লানি,আঘাত,রোগ,শোক ভূলে গিয়ে,
হে আদিশক্তি মহামায়া, তোমাকে বরণ করে নেওয়া।
রেডিওতে বেজে ওঠে স্তোত্র -
"রূপংদেহী, জয়ংদেহী, যশোদেহী"
দ্বিজেন মুখোপাধ্যায় আহ্বান করে ওঠেন -
"জাগো মা, জাগো দশপ্রহারণ ধারিণী"
মা, তুমি তো সত্যিই অভয়াশক্তি, বলপ্রদায়িনী...
তোমার বন্দনা করে সব শোক উপেক্ষা করতে পারি আমরা।
তবু তুমি এসো মা....
ঘরের মেয়ে সকল রোগকে বিনাশ করে,
সকলের মনকে আনন্দ আর বরাভয় দিয়ে,
তোমার আলোর বেনু বাজিয়ে এবার ঘরে ফিরে এসো...
-