||প্রার্থনা করি||

এক বিকেল সাজানো প্রেমিক হেঁটে গেছে,
দূরে কৃষ্ণচূড়া যেন রোদ কিনেছে লাল...
আদতে ওরা বৃষ্টি কিংবা গ্রীষ্ম দেখলেও, চায়নি কোনোটাই!
বোঝেনি, আদরের মতো মানুষও নিঃস্ব।
আলোর কাছে 'ফেলে আসাদের’ ঠিকানা নেই,
তাই, একটানা সুরে ফাগুন এসে ফিরে যায়...
জলতরঙ্গ বেজে ওঠে কোথাও তারা ভরা শরীরে;
নদী ভেবে ছুঁতে চাওয়া বুকে পাহাড় পাহাড় ঢেউ
ফিরে যেও না বলতে তবু গলা কাঁপে!

রেখে দেওয়ার চেয়ে মুক্তি খুঁজো আলো, নরম... পেলব
মেঘ কোলাজে ফ্রেসকো আঁকতে বলবে না কেউ
তবে, চলে যাওয়ার কোনো শব্দ হয় না আজও,
পরে জেনেছি, পুরুষ জন্ম কেবল বীজের আর নারী জন্ম সৃষ্টির।

সমীকরণ শেষ হয়ে এলে পাহাড়ে খুঁটি বেঁধে আসি,
সুগন্ধ ছড়ানো আলো তবু নির্বাক
উত্তাপ নেই বুকের বাঁ-পাশে, এক কালে নদী ছিল
সংক্ষিপ্ত হোক এ অনন্ত, তবু প্রার্থনা করি...

“আজিব দাস্তান হে ইয়ে, কাঁহা শুরু, কাঁহা খতম...
ইয়ে মানজিলে হে কৌনসি, না ওহ সামঝ্ সাকে, না হম...”

-

তারা ছড়ায়, অনন্ত এক আলো
আকাশ কেমন, নীরব হয়ে থাকে
যার দু'চোখে, ফেরার হদিশ দিলো
সেই মুসাফির, তোমার কথাই রাখে;
বায়না এমন, অপেক্ষাদের নামে
প্রিয়াঙ্কাকে, জন্মদিনের খামে।

-

দু'চারটে শোক সাজিয়ে মহান হওয়ার বাতিক নেই,
জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গেলে, সুনামি ডাকতে পারো অনায়াসে
শাপলার বোঁটায় জড়িয়ে আছে যে সুখ, তার পিতৃ-পরিচয় নেই!
হেঁটে যাওয়া সকালের বুকে এটুকু লেখা থাক…

ব্যারিকেড ভেঙে শব্দেরা ঢুকে পড়ে, কালবৈশাখী যেন
পিছু ফিরলে ডুবে যায় সূর্য, তুমিও কী?
মুরাকামি বুঝিনি, নদীমন অতীত, জেগে আছো বললে;
জোনাকি ভেসে ওঠে একরাশ…

জন্মের দাম ছুঁয়ে গেছে কোনো সন্ধ্যাতারা,
রেখে দেওয়া শ্রাবণের মতো অ্যালিগোরি;
আকাশ ছোঁয়া উইলো বুকে নিয়ে ঘুম সাজাই
নাশপাতি ভোর দরজায় এসে দাঁড়ায়, জেগে ওঠা ভগ্নাংশ!

কুয়াশার মায়া জড়িয়ে নিলে তুমি-রোদ্দুর সবাই একাকার
আর আকাশে হাত পাতা হয় না…
মহর্ষির মতো কোনো নিথর অতলে বেড়ে ওঠো যেন,
চোখ তুলে তাকালেই হেরে যাবে, অভিশাপ!

আদিগন্ত প্রাচীন পেরিয়ে, বয়ে যাওয়া খোলা চুল নদী
নাভিপদ্মমূলে স্থিতু হও, ঐখানে জন্ম লেখা থাক।

-

-

•ওয়াকিং ডিসটেন্স•

কলমিলতার বুক ছুঁয়ে হেঁটে গেছে আলো
জড়িয়ে নেওয়া কবিতার পাশে একটা জ্যান্ত হৃদয় রেখে এসেছি;
পায়ে পায়ে ছেলেবেলা এসে থামে যৌবন দালানে,
অজানা চোখের মতো মুগ্ধতা নেমে আসে কুঁড়িফুলে
অসহায়তা ভেবে সুতো ছাড়ি ক্রমশ,
পড়ে থাকে নীল বিকেল, কাটা ঘুড়ি আর কয়েক মুঠো সূর্যাস্ত।

চৌকাঠে ঝড় এসে থিতু হয়, সন্ধে ডাকার মন্ত্র বাতাসে নেই;
যেন বয়ামের ঢাকনা খুলে ছড়িয়ে পড়ে স্মৃতির অরিগ্যামি!
গোধূলি কেনা লাল হাঁটু মুড়ে আগুন পুষে যায়
বর্ষাফুল জেগে ওঠে ভাদ্র পেরিয়ে কোনো পুরুষালি ডাকে
কেবল তারা জুড়ে জুড়ে কালপুরুষ আঁকি আমি।

খই, জোনাকি আর পোড়া গন্ধ পাশাপাশি বসে
তারিফ করলে মৃত্যুর মানে মুক্তি দাঁড়ায়,
ছুঁলেই লাইটনিং, বুকের পাশে উল্কা খোঁজে শহর
ঐ যে অনুভূতির সফরে শব্দেরা অ্যামিনেবল;

আদতে জীবন বলতে এটুকুই, অর্ধবৃত্তের ওয়াকিং ডিসটেন্স!

-

হারতে গেলে জিতিয়েছে যারা
খয়েরি ক্ষত, দু'চোখ ধোয়া সবই
তাদের কাছে ভালো থাকার রসদ
এক’পা দু’পা, সুখের অতল ডুবি।

হিসেব নিলে, অন্তমিলে খুঁজো
হাঁটতে গেলে থমকেছিল গড়া
আজকে আছি, কালকে নাও পারি
জীবন মানে হাজার ওঠা-পড়া।— % &

-

হার্ট অফ ডার্কনেস
----------------------

অন্ধবিশ্বাসের মতো চেপে বসে বয়ঃসন্ধি,
ছুঁয়ে দিলেই ফুটে ওঠে সার সার লেবুফুল!
প্রায়শ্চিত্তের জল পেরোয় শরীরের ভিত ছুঁয়ে;
অসংলগ্ন ঠোঁট তারার মতো গলে গেল এই
নভেম্বর এলে একগ্লাস পাপ গিলে নিই, তারপর
এ নীল গ্রহে আরোগ্যলাভের প্রার্থনায় বসি…

মৃত মানুষের মতো রাত নিঃস্ব করে যায়,
স্মৃতির কালপুরুষ, তোমায় দিলাম হার্ট অফ ডার্কনেস।

-

উপশম নেই কোনো, জ্বলছে এমন রোষ
ডাকলে তুমি আকাশ, বৃষ্টি রাখে দোষ।

সেই মেয়েটার জন্মদিন, আকাশ যেন ভালো
ভালো থাকা ইচ্ছেদের, ডাক পাঠালো আলো।

-

বন্দর পেরিয়ে গেলে ফেরার ভয় থাকে না,
মুঠো বিকেল গলে গেছে গোধূলি কিনে
আকাশের কাছে ওরা ঋণী ছিল হয়তো কোনোদিন
মোমবাতি নিভিয়ে তারা গোনে সময়, ধীর-স্থির
যেন আলো বুকে নিয়ে খিদে জমানো শহর!

ছুঁয়ে দিলে লেগে থাকে বোগেনভেলিয়া
তারাখসা সুখে মাথা রাখো তথাগত,
জানি পাতাঝরা মরশুম খুঁজে নেবে ডিসেম্বর
তবু নদী হয়ে এসো কোনো অপেক্ষার ওপারে;
যদি বলি, অসুখ বলতে হারিয়ে ফেলার ভয়!

এ জীবনে ঈশ্বর আসেন সময় হয়ে,
ডাইসের পুটে বেঁচে থাকা ছক্কার লোভ!
যাবতীয় এক্সিবিশন চলে দুঃখের দামে
এসো না, এ ধ্বংসাবশেষ লিলিথের অভিশাপ...

মন্ত্রোচ্চারণে তৃষ্ণা জমে তথাগত,
ধূপকাঠি, ক্ষয়ে যাওয়া হৃদয় আর যা কিছু
নিভন্ত গোধূলির আঁচে ক্রিসেনথেমাম হোক!

-

-