কলকাতার ভীড়, দমবন্ধ পরিবেশ, বাড়িতে বসে পড়া বেকার বাবার একমাএ মেয়ের প্রতি প্রত্যাশা " মনাই, দেখ্ তুই ছাড়া আমার আর কেউ নেই!", অফিসে বসের কুদৃষ্টি আর তার নানা অছিলায় করা নোংরা ইঙ্গিত.. সব নিয়ে তিতাসের নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের জায়গাটুকুও যেন ধীরে ধীরে মিশে যাচ্ছিল অন্ধকারে, প্রতিদিন নিজের প্রত্যাশা, ইচ্ছেগুলির গলা টিপে খুন করে তার প্রাণও যেন নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছিল।
আজ আবারও বস গায়ে হাত দিয়েছে, আর বলেছে যদি ওর দাবি না পূরণ করি তো কাজ থেকে বাদ দিয়ে দেবে.....কোনোমতে পালিয়ে এসেছি ওই নরক থেকে, কিন্তু এখন... কোথায় যাব, কি করব, এত তাড়াহুড়োয় কেই বা আমায় চাকরি দেবে, বাড়িতে কি বলব, এসব ভাবতে ভাবতে ঠিক সন্ধ্যে সাতটায় হাওড়া ব্রিজে এসে দাড়িয়েছি, মনে হচ্ছিল ঝাঁপ মেরে দিই গভীরে সেখানে গেলে যেন আমার সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
রেলিঙের ওপর একটা পা তুলতেই পেছন থেকে আওয়াজ এল, "আমার মতই চলে যাচ্ছিস, তোর বাবাকে ছেড়ে?"...হঠাৎ চমকে পেছনে তাকিয়ে দেখি মা দাড়িয়ে.." এভাবেই হেরে যাবি? আচ্ছা, সুখে থাকবি তো ওখানে?"... চমকে গিয়ে টনক নড়ল, কি হচ্ছে না হচ্ছে ভেবে ওঠার আগেই নিজের অজান্তেই বাসে চাপলাম, সেদিন ওটা মা ছিল কিনা জানি না... হয়ত আমার দায়বদ্ধতাই আমায় হাতছানি দিয়ে ছিল পিছুটানের তাগিদে!
-