জয় হিন্দ
............
ঐ মানুষটার ও আজ স্বাধীনতা দিবস- যে লোকটা
ঘাটতির বর্ষার মরসুমে,নিম্নচাপের প্রাণদায়ী বৃষ্টিতে
মাঠে ফসল ফলানোর কাজে হাঁটুজলে মগ্ন,মাটিমেখে।

ঐ মেয়েটির ও আজ স্বাধীনতা দিবস- যে মেয়েটা
কৈশোরের উচ্ছাসে গা না ভাসিয়ে ছুটছে এ-বাড়ি ও-বাড়ি
মাসোহারা বা হপ্তার টানে; ঘর্মাক্ত, তেরঙাহীন সাজে।

ঐ পাগলটার ও আজ স্বাধীনতা দিবস- যে লোকটা
মুখভরা দাড়ি-চুলে অকারণে হাসে,ছোট ব্রিজটার ঢালে;
শুধু পুটলি কে ভালোবেসে থাকে জড়িয়ে,ভুখাপেটে।

আরো কত লোক আমাদের এই চারপাশে-
ওদের আজ ঘর ঘর তেরঙা নেই,
হোয়াটসআপ, ফেসবুক,ইনস্টাই ডিপি নেই,
কারো ক্লাবের ডাক নেই,প্যারেড নেই,
ঘরে চাল নেই,মাথায় চাল নেই,
শুধু কত কত নেই আর নেই।

হয়তো মেকি স্বাধীনতার ভান করেনা ওরা,
হয়তো বা ওরা কেউ কেউ প্রকৃতই স্বাধীন।
তাই ওদের সকলকে ভালোবেসে,সকলে সমস্বরে
চলো বলি তবে - জয় হিন্দ, জয় হিন্দ, জয় হিন্দ।

-

যেভাবে হয়েছে ধ্বংস হায়,নবরূপে তার ফেরেনি তেমন হাল,
ফেলে আসা আঁচড়ের দাগে আটকে পড়েছে সারা দিনকাল।

-

নামহীন গহীন যত স্তব্ধতা ঘিরে ধরে ঘোর কোলাহলে,
মায়া হয়ে,বনছায়া হয়ে ছেয়ে যায় মননের ঘেরাটোপে।
মৃত্যুভয়ে অবিরত ভীত,কোনোমতে জীবিত যে মনন,
তারই মাঝে স্মৃতিদের যাওয়া আসা- তবে কি অকারণ?

-

ওইটুকুই সম্বল
.....

রোদের চাদর ভাসে শান্ত নদীর পাশে
হাওয়ায় হওয়ায় বইছে তরী ভীষণ উল্লাসে।

মেঘলা মনের দিনে যেন দুঃখ আসে বিনে
চাওয়ায় পাওয়ায় জমছে পলি আমার আস্তিনে।

ভাসুক রোদের চাদর ছুঁয়ে যাক নরম আদর
আলোয় আলোয় মেঘ সরিয়ে কাটবে ভরা ভাদর।

ওই শান্ত নদীর জল তীরের সবুজ ঘাসের দল
তুমি জানো না,নাকি মানো না? আমার ওইটুকুই সম্বল।

-

সারাদিন টুপটাপ ঝরে যাও তুমি,
গড়ে যাও দিনরাত যে স্বপ্নভূমি-
সারারাত শুনশান ডাক দেয় যত্নে,
বোঝা যায়,শোনা যায় জেগে দেখা স্বপ্নে।

-

অসুখ
...
আজ জমেছে অসুখ
এই ভাঙা চোরা বুকে,
সেই প্রিয় চেনা সুখ
উঁকি দেয় চোখে,
যেন 'নেই নেই' বিদ্রুপে।

আজ মন চুরি নেই
বিনা কোনো অজুহাতে,
রাত জোছনায় সেই
শুধু তুমি আসো পাল্টাতে,
পড়ে ফেলা সব পৃষ্ঠাতে।

আজ জমেছে অসুখ
সেই হাসি মাখা চিবুকে,
নির্বাক যত আছে দুখ
হারাচ্ছে দিনদিন মুখে,
তুমিহীন যত দুর্বিপাকে।

-

তুমি থাকলে
-------
তুমি থাকলে পোড়া গ্রীষ্মের সন্ধ্যায় শুধু তুমি থাকতে
সাঁঝবেলার স্নিগ্ধতায় দখিনা হওয়ার মধুরিমা থাকতো না।
তুমি থাকলে সৈকত জুড়ে শুধু তুমি থাকতে,পাশে হাঁটতে
উপকূল ছাড়িয়ে নীল অনন্তের মায়াডাক কানে আসতো না।
তুমি থাকলে ঝিরঝিরে বৃষ্টিতে শুধু তুমি থাকতে,সাথে ভিজতে
ভরা শ্রাবনের মনখারাপে কদমফুলের উন্মত্ত ঘ্রাণ থাকতো না।
তুমি থাকলে পাহাড়ী ঝর্ণায় শুধু তুমি থাকতে,সবুজের কাছে ডাকতে
পাহাড়ের গা ধরে ঝর্ণার উৎস সন্ধানের কৌতূহল থাকতো না।
তুমি থাকলে মাটি থেকে আকাশ,শরৎ বা বসন্তবাতাস,শুধু তুমিই থাকতে
সময়ের অখণ্ডতায় তুমিহীন যত অনুভব অনুরাগে বিবর্তিত হতো না।

-

মেঘে মেঘে ভেসে
কাছাকাছি এসে
আদরে আদরে
ঘনালো অবশেষে।

প্রিয় পথ জুড়ে
রাধাচূড়া ভরে
জল পড়ে ঝরে
টপ টপ করে।

মেঘে মেঘে এসে
অনাবিল হেসে
ফোঁটা কেটে ঝরে
বড় ভালোবেসে।

প্রিয় নদীতীরে
হাওয়া শিরশিরে
বেনামী দুপুরে
পড়ে ঝিরঝিরে।

-

কিছু মায়া জমা থাক, কিছু নাও কুড়িয়ে;
ভালোবেসে তাও দেবো একদিন ফিরিয়ে।

-

কোথায় যেন
.....
কোথায় যেন আমরা বাঁচি যোজন দূরে হারিয়ে
কোথায় যেন তোমরা আছো তারার মতো ছড়িয়ে
কোথায় যেন রাত্রিবাসে দীর্ঘশ্বাসে শীতল বায়ুর ছোঁয়া
কোথায় যেন হাজার সুখে মাজার জুড়ে অন্য প্রেমের ধোঁয়া।
কোথায় যেন তোমার বাঁচা নিপুন এক অভিনয়ে
কোথায় যেন বাঁচতে থাকা নির্বিকার মৌন শিলা হয়ে
কোথায় যেন পলাশ মাতে যৌনতাতে নববসন্তের শাখে
কোথায় যেন কিশোর বুকে আবির চিবুকে আগুনপাখির ডাকে।

-